স্বদেশ ডেস্ক:
ইউরোপে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির চরম অবনতি হওয়ায় দেশে সংক্রমণ ঠেকাতে কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এর অংশ হিসেবে যুক্তরাজ্য বাদে ইউরোপ থেকে আসা সব যাত্রীর জন্য বাংলাদেশের দরজা বন্ধ হচ্ছে আজ সোমবার দুপুর ১২টা থেকে। এ সময়ের পর ৩১ মার্চ পর্যন্ত ইউরোপের কোনো দেশের নাগরিক এমনকি বাংলাদেশিরাও এ দেশে এলে তাদের গ্রহণ করা হবে না বলে জানিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান এ তথ্য জানান।
বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ‘সোমবার দুপুর ১২টা থেকে যুক্তরাজ্য ছাড়া ইউরোপের অন্য কোনো দেশ থেকে আসা যাত্রীদের বাংলাদেশ গ্রহণ করবে না। এক্ষেত্রে এয়ারলাইন্সগুলো যদি এসব দেশের যাত্রী নিয়ে আসে, তাহলে তারা নিজ খরচে আবার ফেরত নেবে।’
বিশ্বে কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা দেড় লাখ ছাড়িয়ে যাওয়া এবং মৃতের সংখ্যা ৬ হাজার ছাড়িয়ে যাওয়ার পর বিভিন্ন দেশ বিমান চলাচল বন্ধ করে দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রও ইউরোপের সব ফ্লাইট বাতিল করেছে। এবার বাংলাদেশ একই ব্যবস্থা নিল।
এ ছাড়া বাংলাদেশ আগামী দুই সপ্তাহ সব দেশের নাগরিকদের ‘অন অ্যারাইভাল ভিসা’ দেওয়াও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেসব দেশ বাংলাদেশ থেকে তাদের ওখানে যাতায়াত বন্ধ করেছে, সেসব দেশ থেকেও ঢাকায় আসা বন্ধ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ভারত, নেপাল, সৌদি আরব, কাতার ও কুয়েত রয়েছে। ফলে ভারতে থাকা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে দেশে ফিরতে পারবেন না।
গত শনিবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, কার্গো ফ্লাইট ও কুরিয়ার সার্ভিস এগুলো চালু আছে, থাকবে। তবে ফিজিক্যাল মিটিং কমিয়ে যোগাযোগটা অনলাইনে করা হচ্ছে।
সৌদি থেকে ফেরি ফ্লাইটে যাত্রী আনবে বিমান : যেসব যাত্রী ওমরাহ বা বিশেষ কোনো কারণে এখনো সৌদি আরব রয়ে গেছেন, তাদের
জন্য ফেরি ফ্লাইটের ব্যবস্থা করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টায় জেদ্দা থেকে ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবে। আপাতত সৌদি আরবে আর কোনো ফ্লাইট পরিচালনা করবে না বিমান।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোকাব্বির হোসেন জানান, সৌদি আরবের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিমানের ফ্লাইট বন্ধ করা হয়েছে। তবে জেদ্দা ও মদিনায় থাকা যাত্রীরা ফেরি ফ্লাইটে দেশে ফিরতে পারবেন।
করোনা ভাইরাসের কারণে ইতোমধ্যে ১০টি রুটে ৭৪টি ফ্লাইট কমিয়ে দিয়েছে বিমান। এসব ফ্লাইটের যাত্রীদের টিকিটের টাকাও ফেরত দেওয়া শুরু হয়েছে। কুয়ালালামপুর, কাঠমান্ডু, কলকাতা, দিল্লি, ব্যাংকক, সিঙ্গাপুর, দোহা, জেদ্দা, মদিনা, কুয়েতের ১০টি গন্তব্যে সপ্তাহে ১৪২টি ফ্লাইট চলাচল করত বিমানের।